সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি: বৈষম্য বিরুধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যা মামলার এজহার ভুক্ত আসামীরা আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের নিমাইকাশারী এলাকায় ছাত্রলীগ ও এলাকার আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ ও চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট বিএনপি নেতার উপর হামলা চালিয়ে তার অফিস ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছেন। এসময় বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতংক সৃষ্টি করে ওই বিএনপির নেতার মার্কেটের সীমানাপ্রাচীর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই ভুক্তভোগী বিএনপি নেতা।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মান্নানের সাথে তাসলিমা আক্তারের জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। এ বিষয়ে জমির সীমানা প্রাচীর নিয়ে দু পক্ষের মধ্যে আদালতে মামলা চলে আসছে। মহামান্য আদালত দুই পক্ষকে যার যার দখলে থেকে শান্তিপূর্নভাবে বসবাস করার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আওয়ামীলীগ নেতা জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে তাসলিমা আক্তার, শোভন মিয়া, সজিব মিয়া, কাউসার, আকাশ, জনি, আরমান, রেহেনা আক্তার ও কুলসুম আক্তারসহ একটি সন্ত্রাসীবাহিনী দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তার অফিস কার্যালয়ে হামলা ও ভাংচুর চালিয়ে তার ড্রয়ারে থাকা সাত লাখ টাকা ও গুরুত্বপূর্ন কাগজপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসময় জমির সীমানাপ্রাচীর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয় সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসী ওই বিএনপি নেতাকে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। সে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ও আতংকে দিন কাটাচ্ছেন।
এলাকাবাসীরা জানান, ছাত্রলীগ নেতা শোভন মিয়া, সজিব মিয়া, কাউসার, আকাশ, জনি, আরমানসহ একটি ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী গ্রুপ পুরো এলাকায় পূর্বের ন্যায় এখনো বহাল তবিয়তে এলাকায় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, জমি দখলসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আসলেও স্থানীয় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করছেন না। গত পাঁচ আগষ্ট সরকার পতন হলেও নিমাইকাশারী এলাকায় ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসীরা ও আওয়ামীলীগ নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন বহাল তবিয়তে পুরো এলাকা দাবিয়ে বেড়াচ্ছেন। জনি মিয়া, আরমান মিয়া, শোভন মিয়া, সজিব মিয়াসহ একটি মাদকের সিন্ডিকেট ওই এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছেন। প্রশাসনের নিষ্কৃয়তায় ওই মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সদস্যরা তাদের মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা। জাহাঙ্গীর হোসেন প্রবাসী হলেও এলাকায় এসে মাদক ব্যবসায়ী ও ছাত্রলীগের নামধারী সন্ত্রাসীদের নিয়ে এলাকায় একটি বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছেন। এসকল বাহিনীর মাধ্যমেই তিনি পুরো এলাকায় ত্রাসের রাজক্ত কায়েম করছেন।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মান্নান বলেন, তাসলিমা আক্তারের সাথে একটি জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। বিজ্ঞ আদালত উভয় পক্ষকে শান্তিপূর্নভাবে বসবাস করার জন্য আদেশ দিয়েছেন। কিন্তু সন্ত্রাসীরা আদালতের নির্দেশ অমান্য করে আমার অফিসে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়ে সাত লাখ টাকা নিয়ে যায়। এসময় তারা আমার মার্কেটের সীমানাপ্রাচীন ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়। আমি আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগ নামধারী ও মাদক সন্ত্রাসীদের অবিলম্ব গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনুর আলম জানান, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। উল্লেখিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা থাকলে অবিলম্বে তাদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব-১১ এর অধিনায়ক তানভীর মাহমুদ পাশা জানান, গণঅভূত্থানে হত্যা সাথে জড়িতদের আসামীদের বিরুদ্ধে আমরা ইতিমধ্যে অভিযান পরিচালনা শুরু করেছি। এসকল অভিযুক্ত ব্যক্তিদের চিহিৃত করে খুব শিগ্রই গ্রেফতার করা হবে। ওই এলাকার চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।


