তানিয়া তাহা, সিএনবি নিউজ: বয়োবৃদ্ধ হালিম আলী সিদ্ধিরগঞ্জের নিমাইকাশারী এলাকায় বসবাসকারীদের অতি চেনামুখ। সে ছোট বড় সবার কাছেই হালিম মামু নামে পরিচিত।
প্রতিদিন কাকডাকা ভোরে ভ্যানে করে শাকসবজি নিয়ে বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেন। বিভিন্ন জাতের সবজি নিয়ে প্রায় ৩৫ বছর ধরে ফেরী করে বিক্রি করছেন। সে দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে সুস্বাস্থ্যের জন্য বড়ই উপকারি নিরাপদ খাদ্য কচুর ডাটা, লাল শাখ সজনে পাতা, কুমড়ো শাখ, লাউ শাখ, কলার মোচা সেই সাথে বেগুন করল্লা পটল, সিম, মিষ্টি কুমড়ো, পেপেসহ নানান জাতের সবজি বিক্রি করেন।
এই সব শাখ সবজি শহরের বিভিন্ন বাড়ি বাড়ি পৌছে দিয়ে সেবা করে আসছেন আমাদের হালিম মামু। বিনিময়ে চালাচ্ছেন নিজের সংসার।
হালিম আলীর গ্রামের বাড়ি যশোর জেলার বাদাম তলী গ্রামে। কিন্তু সে আয় রোজগার করার জন্য পরিবারসহ শহরে চলে আসেন। এখানেই সে দীর্ঘ দিন ধরে সবজি বিক্রি করছেন। প্রায় পাঁচ থেকে ছয় কিলোমিটার দুর থেকে সবজি কিনে নিয়ে এসে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকাবাসীর বাড়ি বাড়ি পৌছে দেন। কনকনে ঠান্ডায় ঘামে গরমে হালিম আলীর শরীরের কাপড়ের সবটুকু ঘেমে একাকার হয়ে যায়। সবজি বিক্রি করে নরম রোদেই চাল, ডাল কিনে বাড়ি ফিরেন তিনি।
এলাকাবাসীরা জানান, প্রতিদিন হালিম আলী তাদের সবুজ শাখ সবজি খাওয়ান। দূরদূরান্ত থেকে মালামাল এনে তাদের চাহিদা পুরণ করেন। হালিম আলী অত্যান্ত ভালো মনের মানুষ। তার সহযোগীতায় সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানান স্থানীয়রা।
আফরোজা আক্তার নামে নিমাইকাশারী এলাকার এক বাসিন্দা জানান, হালিম আলীকে আমরা আমাদের হালিম মামা নামে ডাকি। তিনি সবসময় তরতজা শাক সবজি বিক্রি করেন। তাই তার কাছ থেকে শাক-সবজি কিনে খেয়ে ভালো থাকেন তারা। তবে দীর্ঘ ৩৪ বছরেও হালিম আলীর এক অবস্থায় আক্ষেপ করে বলেন, সরকারের সুদৃষ্টি ও সহযোগী পেলে হালিম আলী(আমাদের হালিম মামা)র সুখে বসবাস করতে পারতেন।
আবির শিকদার নামে ওই এলাকার এক বাসিন্দা জানান, আমাদের এলাকায় কত বিত্তবান রয়েছেন তারা যদি কিছুটা সহযোগীতা করতো হালিম আলীকে তাহলে হয়ত তার জীবনটা সুখেই কাটতো। আসুন আমরা হালিম আলীর পাশে থাকি। তাকে সহযোগীতা করি।
বৃদ্ধ বয়সেও তিনি কেন এমন পরিশ্রমের কাজ করছেন এমন প্রশ্ন করলে হালিম আলী জানান, তার পরিবারের রায়জোর করার লোক তিনি একাই। তিনি চান না অন্যের ঘাড়ে বোঝা হয়ে থাকতে। যত দিন শরীর সুস্থ্য আছে, ততোদিন পরিশ্রম করতে হবে। তাছাড়া কাজ করলে দেহ মন উভয়ই ভালো থাকেন তাই তিনি কাজে এতো মনোযোগী।
হালিম আলী জানান, সংসার জীবনে তার চার কন্যা ও স্ত্রীকে নিয়ে সুখেই কাটছে তার। কন্যাদের পড়াশুনা করিয়ে মানুষের মত মানুষ গড়তে চান তিনি। যেন তারা দেশ ও দশের সেবায় সবসময় পাশে থাকতে পারেন।